আন্তর্জাতিকবিশ্ব রাজনীতি

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর: রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ১৩ থেকে ১৬ মে মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করতে যাচ্ছেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট এই সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম রাষ্ট্রীয় বিদেশ সফর, যদিও এর আগে তিনি ২৫ এপ্রিল পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে ভ্যাটিকান সিটি যাবেন ।

সফরের সময় ও প্রেক্ষাপট

ট্রাম্পের এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক বাস্তবতা অনেকটাই বদলে গেছে। চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি-ইরান উত্তেজনা প্রশমিত হয়েছে, ইয়েমেনে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ প্রায় শেষের পথে এবং আইএসের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর উপস্থিতিও কমেছে । এই পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের সফরকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সফরের উদ্দেশ্য

প্রাথমিকভাবে এই সফরের মূল লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ধনী উপসাগরীয় দেশগুলোর বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন বরাবরই আগ্রহ দেখিয়ে এসেছে । এছাড়া চলমান বৈশ্বিক বাণিজ্য সংকট এবং যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতিও আলোচনায় আসতে পারে ।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ঐতিহ্যগতভাবে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর সাধারণত যুক্তরাজ্যে হয়ে থাকে। তবে ট্রাম্প গত ২৫ জানুয়ারি সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে তাঁর প্রথম সফর সৌদি আরবে হতে পারে । এই সফরটি সেই ইঙ্গিতকেই বাস্তবে রূপ দিচ্ছে।

সম্ভাব্য আলোচ্য বিষয়

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক, ইরান-সৌদি সম্পর্ক, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যু এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্ভাব্য আলোচ্য বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে । বিশেষ করে গাজা যুদ্ধ বন্ধে কাতার ও মিসরের নতুন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে ।

অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

এই সফরের সময় ট্রাম্প দেশে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখোমুখি হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি, সরকারি চাকরি থেকে ছাঁটাই এবং বৈদেশিক নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ চলছে । এমনকি ‘৫০৫০১’ নামে পরিচিত বিক্ষোভকারীরা আগামী ১ মে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দিয়েছে 3।

উপসংহার

ট্রাম্পের এই মধ্যপ্রাচ্য সফর মার্কিন বৈদেশিক নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে। পরিবর্তিত আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্নির্ধারণ, অর্থনৈতিক সুযোগ বৃদ্ধি এবং কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করাই এই সফরের প্রধান লক্ষ্য বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য সংকট এই সফরের সাফল্যকে প্রভাবিত করতে পারে।

সকল জাতীয়, আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক, বিনোদন, শিক্ষা এবং খেলার সংবাদ সকলের আগে জানতে বাংলা উইকিবিডি Bangla Wiki BD এর সাথেই থাকুনা। আপনার মূল্যবান মতামত নিচে কমেন্ট সেকশন এ শেয়ার করুন ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন :

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button