ঢাকার ২২টি মোড়ে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বসছে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল সিস্টেম

ঢাকার যানজট ও সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে রাজধানীর ২২টি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করছে এই সংকেতবাতি, সিসি ক্যামেরা ও মাইক সিস্টেম, যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকা।
আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল সিস্টেম প্রকল্পের বিস্তারিত
এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৪টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৮টি মোড়ে সংকেতবাতি স্থাপন করা হবে। প্রাথমিকভাবে কার্যক্রম শুরু হয়েছে চারটি মোড়ে:
- ঢাকা উত্তর: কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট
- ঢাকা দক্ষিণ: বাংলামোটর ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়
ইতিমধ্যে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে সংকেতবাতি স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, এবং ফার্মগেটে পরীক্ষামূলকভাবে সিস্টেম চালুও করা হয়েছে। বাংলামোটরে কিছু কাজ বাকি থাকলেও মে মাসের মধ্যেই পুরো সিস্টেম চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
কীভাবে কাজ করবে এই আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল সিস্টেম?
বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংকেতবাতি আধা-স্বয়ংক্রিয় (সেমি-অটোমেটেড) পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে:
- স্বয়ংক্রিয় মোড: সাধারণ সময়ে ট্রাফিক সিগন্যাল নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তিত হবে।
- ম্যানুয়াল কন্ট্রোল: যানজটের সময় ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী অপারেটররা ম্যানুয়ালি সংকেত নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
- সিসি ক্যামেরা ও মাইক: সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হবে এই সরঞ্জাম।
কতটা কার্যকর হবে?
যদিও এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, তবুও কিছু বিশেষজ্ঞ এর সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
বুয়েটের অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ মো. হাদিউজ্জামান বলেন, “সংকেতবাতি একাই যানজট সমাধান করতে পারবে না। এর জন্য রিকশা ও অন্যান্য ধীরগতির যান নিয়ন্ত্রণ, গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা জরুরি।”
পরবর্তী পদক্ষেপ
এই প্রকল্পের সফলতা নিশ্চিত করতে সরকার ও সিটি করপোরেশনগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন:
- মোড়ের আশেপাশে অবৈধ পার্কিং ও যাত্রী উঠানামা বন্ধ করতে হবে।
- ট্রাফিক পুলিশের দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা বাড়াতে হবে।
- গণপরিবহন ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
ঢাকাবাসীর আশা, এই নতুন ব্যবস্থা সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং যানজট কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সকল জাতীয়, আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক, বিনোদন, শিক্ষা এবং খেলার সংবাদ সকলের আগে জানতে বাংলা উইকিবিডি Bangla Wiki BD এর সাথেই থাকুনা। আপনার মূল্যবান মতামত নিচে কমেন্ট সেকশন এ শেয়ার করুন ধন্যবাদ।