
ম্যানচেস্টার সিটির জন্য এই মৌসুমটি যেন একের পর এক চ্যালেঞ্জে ভরা। শিরোপা জয়ের স্বপ্ন প্রায় শেষের পথে, আর এখন লড়াই শীর্ষ চারে জায়গা ধরে রাখার। কিন্তু সেটাও যেন সহজ হচ্ছে না পেপ গার্দিওলার দলের জন্য। আজ শনিবার রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ব্রাইটনের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করে সিটি। এই ড্রয়ের মধ্য দিয়ে গোল হজমের ক্ষেত্রে একটি অপ্রীতিকর রেকর্ডও গড়ল গার্দিওলার দল। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৪০ গোল হজম করেছে সিটি, যা গার্দিওলার কোচিং ক্যারিয়ারে একটি মৌসুমে সর্বোচ্চ।
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
ম্যাচটি শুরু থেকেই ছিল রোমাঞ্চকর। সিটি বল দখলে এগিয়ে থাকলেও ব্রাইটনের প্রতি-আক্রমণ ছিল বেশ শক্তিশালী। প্রথম গোলটি আসে সিটির পক্ষে। ১১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন আর্লিং হলান্ড। তবে গোল খেয়ে ব্রাইটন আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। ২১ মিনিটে পেরভিস ইস্তুপিনিয়ানের গোলে সমতা ফেরায় তারা। এরপর ৩৯ মিনিটে সিটির হয়ে গোল করেন ওমর মারমুশ, এবং এগিয়ে নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করে গার্দিওলার দল।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতে না হতেই আত্মঘাতী গোলের মাধ্যমে ব্রাইটনকে সমতায় ফেরান সিটি ডিফেন্ডার আবদুকোদির খুসানোভ। এরপর উভয় দলই জোরালো আক্রমণ চালালেও আর কোনো গোল হয়নি। ম্যাচটি শেষ হয় ২-২ গোলে ড্র হয়ে।
গোল হজমে নতুন রেকর্ড
এই ম্যাচের মাধ্যমে ম্যানচেস্টার সিটি একটি অপ্রীতিকর রেকর্ড গড়েছে। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৪০ গোল হজম করেছে তারা, যা পেপ গার্দিওলার কোচিং ক্যারিয়ারে একটি মৌসুমে সর্বোচ্চ। এই পরিসংখ্যান সিটির ডিফেন্সিভ দুর্বলতা এবং মৌসুমজুড়ে তাদের অনিয়মিত পারফরম্যান্সেরই প্রতিফলন।
পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান
এই ড্রয়ের ফলে ম্যানচেস্টার সিটি ২৯ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, ব্রাইটন সমান ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে আছে। একই রাতে নটিংহাম ফরেস্ট ৪-২ গোলে ইপসউইচ টাউনকে হারিয়ে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থান দৃঢ় করেছে।
গার্দিওলার চ্যালেঞ্জ
ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলার জন্য এই মৌসুমটি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা প্রায় শেষ, এবং এখন শীর্ষ চারে জায়গা ধরে রাখাই প্রধান লক্ষ্য। তবে দলের অনিয়মিত পারফরম্যান্স এবং ডিফেন্সিভ দুর্বলতা গার্দিওলার জন্য বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কী বললেন গার্দিওলা?
ম্যাচ শেষে গার্দিওলা সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আজ ভালো ফুটবল খেলেছি, কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভুলগুলো ঠিক করতে পারিনি। ব্রাইটন একটি শক্তিশালী দল, এবং তাদের প্রতি-আক্রমণ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে আমরা এখনও শীর্ষ চারে জায়গা ধরে রাখার লড়াই চালিয়ে যাব।”
পরিসংখ্যানে ম্যাচ
- বল দখল: ম্যানচেস্টার সিটি ৬২%, ব্রাইটন ৩৮%
- শটস অন টার্গেট: সিটি ৭, ব্রাইটন ৫
- কর্নার: সিটি ৬, ব্রাইটন ৪
- ফাউল: সিটি ১০, ব্রাইটন ১২
পরিসংখ্যান | ম্যানচেস্টার সিটি | ব্রাইটন |
---|---|---|
বল দখল | ৬২% | ৩৮% |
শটস অন টার্গেট | ৭ | ৫ |
মোট শটস | ১৫ | ১০ |
কর্নার | ৬ | ৪ |
ফাউল | ১০ | ১২ |
অফসাইড | ২ | ৩ |
ইয়েলো কার্ড | ২ | ৩ |
রেড কার্ড | ০ | ০ |
সাফল্যপূর্ণ পাস | ৮৯% | ৮২% |
সেভ | ৩ | ৫ |
এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে, ম্যানচেস্টার সিটি বল দখল এবং পাসিং এ সুবিধা থাকলেও ব্রাইটনের প্রতি-আক্রমণ এবং ডিফেন্সিভ সংগঠন বেশ কার্যকর ছিল। উভয় দলই ম্যাচে সমান তালে লড়াই করেছে, যা শেষ পর্যন্ত ড্রয়ে পর্যবসিত হয়েছে।
শেষ কথা
ম্যানচেস্টার সিটির জন্য এই মৌসুমটি এখনও চ্যালেঞ্জিং। গার্দিওলার দলকে শীর্ষ চারে জায়গা ধরে রাখতে হলে দ্রুতই তাদের পারফরম্যান্সে উন্নতি আনতে হবে। গোল হজমের এই রেকর্ড সিটির ডিফেন্সিভ দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। আগামী ম্যাচগুলোতে সিটি কীভাবে এই সমস্যা মোকাবিলা করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এই ব্লগটি পড়ে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থেকে থাকে, তাহলে নিচে কমেন্ট করে আমাদের সাথে শেয়ার করুন। আমরা আপনার মতামত এবং প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত। আরও নতুন ও আকর্ষণীয় তথ্য পেতে আমাদের ব্লগটি (Bangla Wiki BD) ফলো করুন এবং বাংলা উইকি বিডির সাথে যুক্ত থাকুন।
আপনার মূল্যবান মতামত আমাদেরকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করবে!
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন – Contact. Also Read বাংলা উইকি বিডি – Disclaimer