
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানের মধ্যে ফেসবুককে কেন্দ্র করে তীব্র বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে। গতকাল সারজিস আলমের একটি পোস্টের জবাবে আজ সোমবার রাশেদ খান তাঁর ফেসবুক পেজে একটি পাল্টা পোস্ট প্রকাশ করেন।
রাশেদ খানের তদন্তের দাবি সারজিস আলমের বিরুদ্ধে
রাশেদ খান তাঁর পোস্টে সারজিস আলমের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে জোর দাবি জানান। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "সারজিস আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে কেন তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে না? তদন্ত হলে স্পষ্ট হবে তিনি দোষী নাকি নির্দোষ।"
রাশেদ খান দাবি করেন, গত কয়েক দিন আগে সারজিস আলম তাঁকে ফোন করে দীর্ঘ এক ঘণ্টা আলোচনা করেন। সেই আলোচনায় সারজিস নিজেকে ভুল বুঝানো হয়েছে বলে আক্ষেপ করেন এবং রাশেদকে তাঁর পক্ষে ইতিবাচক পোস্ট দেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে রাশেদ খান এতে সাড়া দেননি। তাঁর মতে, "আমার দেওয়া বক্তব্যের পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ ও তথ্য রয়েছে।"
গাজী সালাউদ্দিন তানভীর , হাসনাত আবদুল্লাহর প্রসঙ্গ
রাশেদ খান তাঁর পোস্টে দাবি করেন, আলোচনায় সারজিস আলম গাজী সালাউদ্দিন তানভীর ও এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকার করেছেন। রাশেদের অভিযোগ, "তানভীর ডিসি নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার পরও এনসিপির মতো দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন। কীভাবে তিনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) কাজের সুযোগ পেলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।"
সারজিস আলমের ফেসবুক জবাব
এর আগে, গতকাল সারজিস আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি দীর্ঘ পোস্টে সকল অভিযোগকে "মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, "গাজী সালাউদ্দিন তানভীর আমার আত্মীয় নন। পার্টিতে তাঁর যোগদান অনেকের সুপারিশে হয়েছে। তিনি কোনো অনিয়ম করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তাঁর নামে অভিযোগ এলে আমাকে টেনে আনা হচ্ছে।"
সারজিস আলম রাশেদ খানের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় বলেন, "তিনি একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হয়েও মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন। আমি তাঁকে চ্যালেঞ্জ করছি—যদি তিনি তাঁর অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেন, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। অন্যথায়, তাঁকেই রাজনীতি ত্যাগ করতে হবে।"
পটভূমি
গত ২১ এপ্রিল এনসিপি থেকে গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ডিসি নিয়োগে অনিয়ম ও এনসিটিবির পাঠ্যবই ছাপানোর কাগজে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকেই সারজিস আলম ও রাশেদ খানের মধ্যে এই বিতর্ক চলছে।
এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই তদন্তের মাধ্যমে স্বচ্ছতা চাইছেন, আবার অনেকে এটিকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হামলা বলে মনে করছেন।