নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় এক রাজনৈতিক সংঘাত নতুন করে উত্তপ্ত করেছে এলাকার পরিস্থিতি। ছাত্রলীগ নেতা সাগর হাসানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে গতকাল থানা চত্বরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনকে জড়িয়ে পড়তে হয়েছে বড় ধরনের উত্তেজনা মোকাবিলায়। ঘটনাটি স্থানীয় রাজনীতির টানাপোড়েনকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে, যা নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।
ঘটনার সূচনা
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক উত্তেজনাকর ঘটনার জন্ম দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা সাগর হাসানের গ্রেপ্তার। সোমবার (২১ এপ্রিল ২০২৫) সকালে তার স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাকে মুক্ত করতে আড়াইহাজার থানা ঘেরাও করেন। ঘটনাস্থলে বিএনপি কর্মীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে।
গ্রেপ্তারের পটভূমি
সাগর হাসান মাহমুদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজের ছাত্র। পুলিশ তাকে রোববার রাতে কল্যান্দী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তিনি তিনটি মামলায় অভিযুক্ত:
১. দুটি হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি
২. একটি ঋণখেলাপির মামলায় পরোয়ানাভুক্ত
থানায় উত্তেজনাপূর্ণ দৃশ্য
সকাল ১১টার দিকে সাগরের আত্মীয়-স্বজন থানার সামনে জড়ো হন। তারা সাগরকে নির্দোষ দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ থানার প্রধান গেট বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ সময় বিএনপি, মহিলা দল ও ছাত্রদলের কিছু কর্মী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালান। উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
আরো পড়ুন : খুলনায় বিএনপির বিক্ষোভ: আওয়ামী লীগের ‘গুপ্ত মিছিল’ ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদ
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য
এক নারী আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন:
“আমরা জানতে চেয়েছিলাম কোন মামলায় সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ কোনো তথ্য দিচ্ছিল না। বিক্ষোভ করার পর বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে।”
পুলিশ ও বিএনপির বক্তব্য
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন বলেন:
“পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। সাগরের মাকে নিরাপত্তার জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
অন্যদিকে, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি সভাপতি ইউসুফ আলী বলেন:
“হামলার ঘটনা আমার জানা নেই। ঘটনা সত্য হলে ব্যবস্থা নেব।”
বর্তমান অবস্থা
পুলিশ সাগর হাসানকে আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। থানা এলাকা এখন শান্ত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আরো পড়ুন : শরীয়তপুরে রাতের মশাল মিছিল: আওয়ামী লীগের জোরালো রাজনৈতিক বার্তা
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের এই ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক অস্থিরতার নতুন একটি অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছে। একটি সাধারণ গ্রেপ্তার কীভাবে বড় ধরনের রাজনৈতিক সংঘাতে রূপ নিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় জনগণের মধ্যে। পুলিশের ভূমিকা এবং বিরোধী দলের কর্মীদের আচরণ উভয়ই সমালোচনার মুখে পড়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসনকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে সকল রাজনৈতিক দলকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সকল জাতীয়, আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক, বিনোদন, শিক্ষা এবং খেলার সংবাদ সকলের আগে জানতে বাংলা উইকিবিডি Bangla Wiki BD এর সাথেই থাকুনা। আপনার মূল্যবান মতামত নিচে কমেন্ট সেকশন এ শেয়ার করুন ধন্যবাদ।
