প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনুস পোপ ফ্রান্সিসের শেষ শ্রদ্ধায় রোমে যাচ্ছেন

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে কাতারের দোহা থেকে ইতালির রোমে যাচ্ছেন। আগামী শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় এই শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও নেতারা অংশ নেবেন।
পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে ব্যক্তিগত সৌহার্দ্য
প্রফেসর ইউনুস বর্তমানে কাতারের দোহায় চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন। আগামী শুক্রবার তিনি রোমের উদ্দেশ্যে দোহা ত্যাগ করবেন। তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে জানান, পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে প্রফেসর ইউনুসের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত আন্তরিক।
“পোপ ফ্রান্সিস দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করতেন, যা প্রফেসর ইউনুসের গ্রামীণ ব্যাংক ও সামাজিক উদ্যোগের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ,” বলেন শফিকুল আলম। “এটি শুধু একজন রাষ্ট্রনেতার অংশগ্রহণ নয়, বরং একজন বন্ধুর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন।”
বিশ্ব নেতাদের অংশগ্রহণে ঐতিহাসিক শেষকৃত্য
৮৮ বছর বয়সে গত সোমবার ভ্যাটিকানে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু হয়। তিনি রোমান ক্যাথলিক চার্চের নেতা হিসেবে ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেন এবং শান্তি, জলবায়ু সংকট ও শরণার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করেন। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ, ব্রিটেনের রাজা চার্লস তৃতীয়সহ শতাধিক বিশ্ব নেতা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ, একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়া সত্ত্বেও, পোপ ফ্রান্সিসের সময়ে ভ্যাটিকানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে। পোপ ফ্রান্সিস রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পক্ষে কণ্ঠ দিয়েছিলেন, যা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রধান উপদেষ্টার রোববার দেশে ফেরার সম্ভাবনা
প্রধান উপদেষ্টা শুধুমাত্র অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবেন এবং রোমে তার অন্য কোনো আনুষ্ঠানিক সভা নেই। তিনি আগামী রোববার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশে ফিরেনা ।
ভ্যাটিকান পোপের মৃত্যুতে নয় দিনের শোক ঘোষণা করেছে এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে সমবেত হবেন। পোপ ফ্রান্সিসকে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার নিচে সমাহিত করা হবে, যেখানে পূর্ববর্তী পোপগণও শায়িত আছেন।
পোপ ফ্রান্সিস: একজন মানবদরদী নেতার বিদায়
আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া পোপ ফ্রান্সিস (জর্জ মারিও বার্গোগ্লিও) তার সরলতা, দরিদ্রদের প্রতি মমত্ব এবং বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার এই দর্শন প্রফেসর ইউনুসের সামাজিক উদ্যোগের সঙ্গে মিলে যায়।
প্রফেসর ইউনুসের এই সফর শুধু বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নয়, বরং বিশ্ব শান্তি ও মানবতার জন্য পোপ ফ্রান্সিসের অবদানের প্রতি সম্মান জানানো।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য (FAQ)
Q: বর্তমান পোপ ফ্রান্সিস কোন দেশের নাগরিক?
A: পোপ ফ্রান্সিস (জর্জ মারিও বার্গোগ্লিও) আর্জেন্টিনার নাগরিক ছিলেন। তিনি লাতিন আমেরিকা থেকে প্রথম পোপ নির্বাচিত হন।
Q: পোপ ফ্রান্সিসের বয়স কত ছিল?
A: পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে মারা যান (১৯৩৬-২০২৫)। তিনি ২০১৩ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পোপের দায়িত্ব পালন করেন।
Q: পোপ ফ্রান্সিস কে?
A: পোপ ফ্রান্সিস রোমান ক্যাথলিক চার্চের ২৬৬তম পোপ ছিলেন। তিনি দরিদ্রদের অধিকার, শান্তি ও পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য কাজ করে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন।
সকল জাতীয়, আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক, বিনোদন, শিক্ষা এবং খেলার সংবাদ সকলের আগে জানতে বাংলা উইকিবিডি Bangla Wiki BD এর সাথেই থাকুনা। আপনার মূল্যবান মতামত নিচে কমেন্ট সেকশন এ শেয়ার করুন ধন্যবাদ।
আরো পড়ুন :