দুই রোহিঙ্গা নারীকে জন্মসনদ প্রদানের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় দুই রোহিঙ্গা নারীকে জন্মসনদ প্রদানের অভিযোগে চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহেরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। আজ শুক্রবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ইউপি-১ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব তৌহিদ এলাহি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ আদেশ জারি করা হয়।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের বরখাস্ত সংক্রান্ত আদেশপত্র পেয়েছি এবং তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে।”
জানা গেছে, গত বছরের ১১ জুন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিয়েতনামগামী ফ্লাইটে ওঠার সময় হুমায়রা ও শারমিন আক্তার নামে দুই রোহিঙ্গা নারীকে অভিবাসন পুলিশ আটক করে। পরবর্তীতে ১৫ জুন কুমিল্লার ডিএসবির উপপরিদর্শক ইমাম হোসেন চৌদ্দগ্রাম থানায় এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করেন। ২৭ জুন পুলিশ উভয় নারীকে গ্রেপ্তার করে।
তদন্তে উঠে আসে, এই দুই রোহিঙ্গা নারী চৌদ্দগ্রামের চিওড়া ইউনিয়নের ডিমাতলী গ্রামের বাসিন্দা কাজী খবির উদ্দিনের মেয়ে সেজে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মসনদ সংগ্রহ করেন। পরে এই সনদের ভিত্তিতে তারা জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরি করে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
বরখাস্ত হওয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “জন্মনিবন্ধন শাখার রেজিস্ট্রার জেনারেলের কারণ দর্শানোর নোটিশের আমি সঠিক জবাব দিয়েছি। আসল অপরাধী কাজী খবির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ তাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে। আমি শুধু সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছি। এতদসত্ত্বেও আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে যা আমার জন্য অযৌক্তিক।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জন্মসনদ ইস্যুর সময় ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহেরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও তিনি দাবি করেন, জন্মসনদ ইস্যুর ক্ষেত্রে তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন না।
এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে এবং জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়া আরও কঠোরভাবে তদারকি করার নির্দেশ দিয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানের শূন্য পদে শিগগিরই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।