অর্থনীতিবৈশ্বিক অর্থনীতি

বাংলাদেশ-চীন অর্থনৈতিক সহযোগিতা: বিনিয়োগ ও বিশ্বায়নের নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক বিশ্বায়নে কাজ করতে প্রস্তুত চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, বিশ্বায়নকে এগিয়ে নিতে চীন বাংলাদেশসহ সকল দেশের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত।

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর ঢাকা সফর ও বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রস্তুতি

চীনের রাষ্ট্রদূত জানান, যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠকের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী আগামী মাসে ঢাকায় আসছেন। তাঁর সাথে প্রায় ১০০ চীনা বিনিয়োগকারীও বাংলাদেশে আসবেন। এছাড়া, বাংলাদেশে অবস্থানরত ১০০ ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকেও মে মাসের বিনিয়োগ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

মোংলা বন্দর, তিস্তা প্রকল্প ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনের অংশগ্রহণ

ইয়াও ওয়েন উল্লেখ করেন, মোংলা বন্দর উন্নয়ন, চট্টগ্রামে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ এবং তিস্তা প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য চীন প্রস্তুত। তিনি সম্প্রতি বাংলা নববর্ষে আয়োজিত ড্রোন শোর সাফল্যের কথা স্মরণ করে বলেন, “এই আয়োজন দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও গভীর করেছে।”

চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক: বেল্ট অ্যান্ড রোড থেকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সহযোগিতা

গত মাসে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরকে দুই দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় হিসেবে বর্ণনা করেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন অংশীদার। বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের পাশাপাশি ডিজিটাল অর্থনীতি, সুনীল অর্থনীতি, অবকাঠামো ও পানি সংরক্ষণে সহযোগিতা বাড়ানো হবে।

এছাড়া, চীন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির সুযোগ বৃদ্ধি, চিকিৎসা সুবিধা সহজীকরণ এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় প্রোগ্রাম জোরদার করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির তীব্র সমালোচনা

ইয়াও ওয়েন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতিকে “অগ্রহণযোগ্য” আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। চীন একটি ন্যায্য ও স্থিতিশীল বিশ্ব অর্থনীতি গড়তে বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের সাথে কাজ করবে।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যারা

প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মিরানা মাহরুখ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নুর-ই আলম বক্তব্য রাখেন।

চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক দিন দিন গভীরতর হচ্ছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ, বিনিয়োগ সম্মেলন এবং বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পের মাধ্যমে দুই দেশের সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে চীনের অবস্থান স্পষ্ট—বাণিজ্য যুদ্ধের পরিবর্তে সমন্বিত উন্নয়নই টেকসই সমাধান। ভবিষ্যতে চীন-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃত হবে, যা দুই দেশের জনগণের জন্য সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।

এই সহযোগিতা শুধু আঞ্চলিক অর্থনীতিকেই শক্তিশালী করবে না, বরং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সকল জাতীয়, আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক, বিনোদন, শিক্ষা এবং খেলার সংবাদ সকলের আগে জানতে বাংলা উইকিবিডি Bangla Wiki BD এর সাথেই থাকুনা। আপনার মূল্যবান মতামত নিচে কমেন্ট সেকশন এ শেয়ার করুন ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন :



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button